কম্পিউটারের পর্দায় দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখের একধরনের ক্লান্তি হয়৷ কিন্তু আধুনিক জীবনযাত্রায় কম্পিউটার ব্যবহারের বিকল্প কোথায়? কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের জন্য অনেকেই সারা দিন যান্ত্রিক পর্দায় চোখ রাখতে হয়৷ এতে চোখের অশ্রু বা তরল পদার্থে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে৷ জাপানের একদল বিজ্ঞানী এ তথ্য জানিয়েছেন৷
সাধারণত এমইউসিফাইভএসি নামের একটি প্রোটিন মানুষের চোখে আঠালো ও ঘন তরল পদার্থের স্তর বা ‘টিয়ার ফিল্ম’ গঠন করে৷ ইউইচি উচিনোর নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী চোখের শুষ্কতা (ড্রাই আই) রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখতে পান, যাঁরা কম্পিউটার পর্দার সামনে বসে অধিকাংশ সময় কাটান, তাঁদের চোখে এমইউসিফাইভএসির পরিমাণ ড্রাই আই রোগীদের চোখে ওই প্রোটিনের প্রায় সমান৷ ড্রাই আই রোগে আক্রান্ত হলে চোখ পর্যাপ্ত পরিমাণে অশ্রু উৎপাদন করতে পারে না অথবা চোখের পানি দ্রুত বাষ্প হয়ে যায়৷
বিজ্ঞানীরা জাপানের ৯৬ জন অফিসকর্মীর অশ্রু সংগ্রহ করেন এবং তাতে মোট প্রোটিন এবং এমইউসিফাইভএসির পরিমাণ যাচাই করে দেখেন৷ দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার পর্দার সামনে কাজ করেন, এমন অফিসকর্মীদের চোখের বিভিন্ন সমস্যা ও উপসর্গ সম্পর্কেও তথ্য নেওয়া হয়৷ জামা অপথালমোলজি সাময়িকীতে এ গবেষণা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে৷ উচিনো বলেন, যািন্ত্রক পর্দায় তাকিয়ে থাকার সময় মানুষের চোখের পাতা সাধারণত অন্যান্য দিকে তাকানোর সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণে খোলে৷ তাই চোখের বাড়তি উন্মুক্ত অংশ থেকে পানি বাষ্পীভূত হওয়ার সুযোগ বৃদ্ধি পায়৷
গবেষকেরা বলেন, প্রতিদিন অন্তত সাত ঘণ্টা কম্পিউটারে কাজ করেন, এমন মানুষদের চোখে এমইউসিফাইভএসির গড় উপস্থিতি প্রতি মিলিগ্রামে ৫ দশমিক ৯ ন্যানোগ্রাম৷ আর প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টার কম সময় কম্পিউটারের সামনে কাটান, এমন মানুষের চোখে এমইউসিফাইভএসির উপস্থিতি প্রতি মিলিগ্রামে ৯ দশমিক ৬ ন্যানোগ্রাম৷
উচিনো বলেন, চোখের পাতার অতিরিক্ত প্রসারণ রোধ করতে দৃষ্টিপথ তুলনামূলক কম উচ্চতায় রাখা এবং কম্পিউটারের পর্দাটি ওপরের দিকে হেলানো রাখা ভালো৷ আর অফিসে বাতাসের আর্দ্রতা বৃদ্ধির যন্ত্র (হিউমিডিফায়ার) স্থাপন এবং শীতাতপ িনয়ন্ত্রণযন্ত্রের (এসি) সরাসরি বাতাস এড়িয়ে চলতে চিকিৎসকেরাও পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷
সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট৷
ধন্যবাদ