কম্পিউটার ব্যবহারের সময় আমরা চোখের পলক ফেলি কম। কম্পিউটারে অনেকক্ষণ ধরে কাজ করলে চোখ জ্বলে। মনিটরের সামনে বসে কাজ করতে বেশ অসুবিধা হয়। অনেকে ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত হন। দৃষ্টি আচ্ছন্ন ও ঘোলা হয়ে আসে, এক বস্তুকে দুটি দেখায় (ডাবল ভিশন), চোখ শুকিয়ে যায়, লাল হয়ে ওঠে, চুলকায়। বিশ্বের প্রায় সাত কোটি কর্মী কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোমের ঝুঁকিতে রয়েছেন। সংখ্যাটা কেবল বাড়ছেই। দিনে মাত্র তিন ঘণ্টা কম্পিউটার ব্যবহার করলেও এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাঁরা আরও বেশি সময় ধরে কম্পিউটারে কাজ করেন, তাঁদের টানা মাথাব্যথা, ঘাড় ও পিঠে ব্যথাও হয়। তাহলে কি কম্পিউটারে কাজ বন্ধ রাখতে হবে? আসুন, দেখি এ সমস্যা কেন হয় ও প্রতিকার কী?
১.কম্পিউটারের পর্দায় লেখাগুলো পিক্সেলে সজ্জিত, এর কিনারগুলো ঝাপসা। তাই পড়ার সময় চোখে চাপ পড়ে। ছাপার অক্ষরগুলোর এ সমস্যা নেই। কম্পিউটারের স্ক্রিনে লেখা পড়ার জন্য চোখের ফোকাস বারবার নড়ে যায় আর চোখ বারবার স্বস্তির জন্য স্ক্রিনের পেছনে ফোকাস প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করে। দৃষ্টির এই নড়াচড়ার জন্য চোখের ওপর চাপ পড়ে ও অবসন্নতা নামে।
২. আরেকটি সমস্যা হলো, চোখের পলক কম পড়ে। সাধারণত মিনিটে ১৭ বার পলক পড়ার কথা, সেখানে পড়ে ১২ থেকে ১৫ বার। ফলে চোখ শুকিয়ে আসে। চোখ কচকচ করে। তা ছাড়া কম্পিউটার পর্দার দূরত্ব থাকা উচিত ২০ থেকে ২৬ ইঞ্চি। এর কম হলে ঝুঁকি বাড়ে।
৩. এসব সমস্যা এড়ানোর কিছু উপায় আছে। মনিটরের কেন্দ্র চোখ বরাবর না রেখে ৪ থেকে ৮ ইঞ্চি নিচে রাখতে হবে। এতে চোখের পলক বেশি পড়বে। চোখ ভেজা থাকবে। সাদা স্ক্রিনে কালো লেখা পড়তে সুবিধা। চারপাশের আলোর চেয়ে মনিটর একটু বেশি উজ্জ্বল হতে হবে। ছাপা লেখা দেখে দেখে কম্পিউটারে লেখার সময় বারবার ঘাড় ঘোরানো কষ্টকর। সে জন্য লেখা কাগজটা মনিটরের পাশে একটি স্ট্যান্ডে রাখতে হবে।
৪. খেয়াল করে কিছুক্ষণ পরপর চোখের পলক ফেলতে হবে। তা হলে চোখের শুকনা ভাব থাকবে না। সমস্যা অনেকাংশে কমবে।
৫. ‘২০-২০-২০’ নিয়মটি মেনে চলুন। এটি হলো, কম্পিউটারে কাজ করার সময় ২০ মিনিট পরপর ২০ সেকেন্ডের বিশ্রাম নিন ও ২০ ফুট দূরের দৃশ্যে চোখ রাখুন।
সংগৃহিত